1. sajalnath8181@gmail.com : admin2020 :
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

সজল কুমার নাথ।
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ মে, ২০২২
  • ৩০৪ বার পঠিত

কবি কে নিয়ে কিছু স্মৃতিময় কথা।
সজল কুমার নাথ।

একজন কবির দুঃখ কাহাকে বলে এর প্রায় সবই কবিগুরু পেয়েছিলেন জীবনে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী মারা গেলেন কবির ৪১ বছর বয়সে। কবির ছিলো তিন মেয়ে, দুই ছেলে। রথীন্দ্রনাথ,শমীন্দ্রনাথ আর বেলা, রাণী ও অতশী।

স্ত্রী’র পর অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন রাণী। এরপর কলেরায় মারা গেলো ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ। পুত্রশোকে কবি লেখলেন
আজ জোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে।
কবি’র মনে হলো এই জোৎস্নায় কবি বনে গেলে হবে না। বরং তাঁকে জেগে থাকতে হবে, যদি বাবার কথা মনে পড়ে শমীন্দ্রনাথ’র! যদি এসে কবিকে না পায়? তিনি লেখলেন-
আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে
যদি আমায় মনে পড়ে তাহার।

রাণীর জামাইকে পাঠিয়েছিলেন কবি বিলেতে ডাক্তারী পড়াতে, না পড়েই ফেরত আসলো। বড় মেয়ের জামাইকে পাঠিয়েছিলেন বিলেতে, ব্যারিস্টারী পড়তে, না পড়েই ফেরেত আসলো। ছোট মেয়ে অতশীর জামাইকেও আমেরিকায় কৃষিবিদ্যার উপর পড়াশোনা করতে। লোভী এই লোক কবিকে বার বার টাকা চেয়ে চিঠি দিতো।
কবি লেখিলেনঃ-জমিদারী থেকে যে টাকা পাই, সবটাই তোমাকে তো পাঠাই।দেশে ফেরার কিছুদিন পর ছোট মেয়েটাও মারা গেলো।

সবচাইতে কষ্টের মৃত্যু হয় বড় মেয়ের। বড় জামাই বিলেত থেকে ফেরার পর ছোট জামাইর সাথে ঝগড়া লেগে কবির বাড়ী ছেড়ে চলে যায়। মেয়ে বেলা হয়ে পড়েন অসুস্থ। অসুস্থ এই মেয়েকে দেখতে কবিগুরু প্রতিদিন গাড়ী করে মেয়ের বাড়ী যেতেন। কবিকে যত রকম অপমান করার এই জামাই করতেন। কবির সামনে টেবিলে পা তুলে সিগারেট খেতেন। তবু কবি প্রতিদিনই যেতেন মেয়েকে দেখতে। একদিন কবি যাচ্ছেন,হটাৎ মাঝপথেই শুনলেন বেলা মারা গেছে। কবি শেষ দেখা দেখতে আর গেলো না। মাঝপথ থেকেই ফেরত চলে আসলেন। হৈমন্তীর গল্প পড়লেই বুঝতে পারা যায় যেন কবির মেয়েরই গল্প!

শোক কতটা গভীর হলে কবির কলম দিয়ে বের হলোঃ-

” আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে
তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে ”

কবির মৃত্যু হলো অতিমাত্রায় কষ্ট সহ্য করে, প্রশ্রাবের প্রদাহে। কী কারনে যেন কবির বড় ছেলে রথীন্দ্রনাথের কাছ থেকে শেষ বিদায়টাও পাননি। দূর সম্পর্কের এক নাতনি ছিলো কবির শেষ বিদায়ের ক্ষণের স্বাক্ষী।

কবি জমিদার ছিলেন এইসব গল্প সবাই জানে। কবি’র দুঃখের এই জীবনের কথা ক’জন বা জানেন?

প্রথম যৌবনে যে গান লেখলেন, এইটাই যেন কবির শেষ জীবনে সত্যি হয়ে গেলোঃ-
“আমিই শুধু রইনু বাকি।
যা ছিল তা গেল চলে,
রইল যা তা কেবল ফাঁকি”॥

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..


© কথা৭১.টিভি দ্বারা সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত।
themesbazarkotha71254