বিজয়া দশমীর তাৎপর্য নিয়ে কিছু কথা:———
দশমী’ কথাটির সাধারণ সহজ অর্থে বলা যায় আবার সহজ অর্থে বুঝা যায়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে বাপের বাড়ি ছেড়ে পাড়ি দেন স্বামীগৃহ অর্থাৎ কৈলাসের দিকে। সেই কারণেই এই তিথিকে ‘বিজয়া দশমী’ বলা হয়।
বিজয়া দশমী মানেই মন ভার করা এক দিন। মাকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি এই দিন বিবাহিত স্ত্রীরা মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলা ও মিষ্টিমুখে। দশমীতেই কেন সিঁদুর খেলা হয় তবে কেন।
পুরাণে এই বিষয়ে একাধিক মত প্রচলিত রয়েছে। প্রজাপতি ব্রহ্মার চেষ্টাতেই এই ধরিত্রী নির্মিত হয়েছে। নর ও নারীর মিলনে গড়ে উঠেছে এই জগত। সিঁদুরকে তাই ব্রহ্মার প্রতীক বলে মনে করা হয়।
ললাটে বা ভাগ্যস্থানে তিনি যাতে অধিষ্ঠিত থাকেন, তাই সিঁদুর পরার রীতি। মায়ের বিদায়বেলায় তাই স্বামীর মঙ্গল চেয়ে সিঁদুর খেলা।
দুর্গতিনাশিনীকে স্মরণ করার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সিঁদুরের মাহাত্ম্য।
বিজয়া দশমীর দিন যে রীতির জন্য বাঙালি নারী অপেক্ষা করে থাকে, সেটি হল সিঁদুর খেলা। শাস্ত্র মতে সিঁদুর ব্রহ্মার প্রতীক।ঐদিন দেবীকে অর্থাৎ মাকে সিদুর পড়ানো হয়। ব্রহ্মা জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর করে আনন্দে ভরে রাখেন বলেই সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করা হয় সিঁদুর খেলা। সিঁদুর খেলার মধ্যে দিয়ে বিজয় দশমীর সমাপ্তি হয় অর্থাৎ মাকে বিদায় দেওয়া হয়।
কিন্তু দশমিকে বিজয়া বলা হয় কেন তার কারণ খুঁজতে গেলে অনেক পৌরাণিক ব্যাখ্যা উঠে আসবে সামনে।পুরাণে মহিষাসুর বধ কাহিনীতে লেখা রয়েছে,মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে তার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন দুর্গা। নারী শক্তির এই জয়লাভকেই ‘বিজয়া’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আবার, শ্রী চণ্ডীর কাহিনী অনুসারে, দেবী আবির্ভূত হন আশ্বিন মাসের কৃষ্ণাচতুর্দশী-তে। মহিষাসুর বধ করেন শুক্লা দশমীতে। তাই দশমীতে এই বিজয়কেই চিহ্নিত করে বলা হয় ‘বিজয়া দশমী’।।
Leave a Reply