বিশ্ব মা দিবস আজ
মুন্নি আক্তার, স্টাফ রিপোর্টার:
দিবসটি উপলক্ষে সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমগুলোয় মা নিয়ে সন্তানদের অনুভূতি প্রকাশ করে ছবি ও নানা লেখায় মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও আবেগের প্রকাশ করছেন সন্তানের
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় ও মমতামাখা শব্দ “মা”। “মা” শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মানসপটে ভেসে ওঠে অসীম, চিরন্তন আত্মত্যাগ, ভালোবাসার এক মমতাময়ী প্রতিমূর্তি।
আজ বিশ্ব মা দিবস। আজ সব মাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন। আজ এই প্রতিজ্ঞা করার দিন, বছরে শুধু এক দিন নয়, মায়ের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা স্থায়ী হোক বছরজুড়ে।
মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে “মা দিবস” হিসেবে পালন করা হয়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে মা দিবস পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমগুলোয় মা নিয়ে সন্তানদের অনুভূতি প্রকাশ করে ছবি ও নানা লেখায় মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও আবেগের প্রকাশ করছেন সন্তানেরা। অনেকে মা কে পছন্দের উপহারও দিয়ে থাকেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় দিবসটি পালন করা হয়। বাংলাদেশে মা দিবস পালিত হয় প্রতিবছরের মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। এর মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া, ভালোবাসা দেওয়া। দিনটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে মাকে ভালোবাসা জানিয়েছে বহু মানুষ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা আনা জার্ভিসের মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন উৎসর্গ করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। ১৯০৫ সালে মারা যান তিনি। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মা অ্যান মেরিকে সম্মান জানাতে মেয়ে আনা জার্ভিস কিছু একটা করার চেষ্টা করেন। তার মায়ের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মা দিবস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়। তবে এই মা দিবস ক্রমেই বাণিজ্যিকীকরণ হলে এর সমালোচনাও করেন দিবসটির প্রবক্তা আনা জার্ভিস।
বিশ্ব মা দিবস
মন্তব্য পড়ুন
মা দিবসে মায়ের জন্য সেরা উপহার
মা দিবসে মাকে চমকে দিতে চলুন জেনে নেওয়া যাক দারুণ কিছু উপহারের খোঁজ
মা দিবসে সন্তানের পক্ষ থেকে মায়ের জন্য ছোট্ট একটি উপহার মায়ের কাছে পরিণত হতে পারে একটি অমূল্য সম্পদে। যদিও মূল্যমানের দিক থেকে পৃথিবীর কোনো উপহার-ই মায়ের অবদানের সমতুল্য নয়, এরপরেও ছোট্ট একটি উপহার বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পারে। বস্তুগত দিক থেকে উপহারটি নিছক একটি টোটেম মাত্র। কিন্তু তার নেপথ্যে যে ভালবাসার প্রকাশ ঘটছে, সেটাই এখানে প্রধান। মা দিবসে মাকে চমকে দিতে চলুন জেনে নেওয়া যাক দারুণ কিছু উপহারের খোঁজ।
পছন্দের খাবার
মায়ের প্রতি আবেগের অভিব্যক্তি প্রকাশের সেরা উপায় হলো তার পছন্দের খাবারটি বানিয়ে তাকে খাওয়ানো। হতে পারে সেটা দুপুরের কোন খাবার আইটেম বা বিকালের হাল্কা খাবার। মিষ্টান্ন খাবার অথবা কোনো ঝাল ভর্তা যেটা বাসায় খুব একটা বানানো হয় না। মাকে না জানিয়ে আগের দিন রাতে বানিয়ে রেখে পরের দিন মাকে চমকে দেয়া যায়। আবার রান্না ঘরে মায়ের সঙ্গে গল্প করতে করতে একসঙ্গে মিলে বানানো যেতে পারে খাবারটি। এভাবে একসঙ্গে রান্নায় মায়ের সঙ্গে দারুণ একটি সময় কাটানো যাবে আর রান্নাপ্রিয় মায়েরা ভীষণ খুশিও হবেন।
প্রিয় বই
মা যদি বই পড়তে ভালবাসেন, তাহলে যে ধরনের বই তিনি সব সময় পড়েন তার সর্বশেষ সংস্করণটি যোগাড় করা যেতে পারে। এই পুরনো ও অকৃত্রিম উপহারটি যে কোনো বইয়ের পোকাকে নিমেষেই পুলকিত করতে পারে। বই পড়ার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ও আরামের জায়গাটা অনেক আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত। দিনের সবচেয়ে প্রিয় মুহুর্তটিতে অনেকেই বেশ আয়োজন করে সময় কাটাতে বই নিয়ে বসে পড়েন। তারপর হারিয়ে যান নিজের প্রিয় কোন জগতে। আর সেই বইটি যদি হয় নিজের সন্তানের দেয়া তাহলে তার থেকে অমূল্য সম্পদ আর কিই বা হতে পারে।
রান্নার সরঞ্জাম
গৃহিণী মায়েদের দিনের সিংহভাগ সময় কাটে রান্নাঘরে। সন্তানসহ ঘরের প্রতিটি মানুষের আহারের দিকটা খুব দায়িত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখেন এই মানুষটি। নিজে খাওয়ার থেকে পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে খাইয়েই তিনি বেশি আনন্দ পান। তাই রান্নার কাজে সাহায্য হয় এমন কোনো সরঞ্জাম উপহার তাঁর জন্য শুধু চমকপ্রদই হবে না, নিজের ভালবাসার রান্নার কাজটিতে তিনি আরও বেশি করে মনোন্নিবেশ করতে পারবেন। রাইস কুকার, ওভেন, ব্লেন্ডারের মত রান্নাঘরের সংযোজনগুলো ক্লান্তিকর কাজগুলোকে আরও সহজতর করে তুলবে। শুধু গৃহিণী নয়; কর্মব্যস্ত মায়েদের জন্যও এই উপহারগুলো একটি সঠিক পছন্দ হতে পারে।
উপহারের জিনিসটি যত দামিই হোক না কেন; মায়ের ভালবাসার কাছে সে সবই মূল্যহীন। এরপরেও নিজের পরিশ্রম ও কষ্টার্জিত উপার্জনকে মায়ের ভালবাসায় সিক্ত করার এক উপযুক্ত প্রয়াস হতে পারে এই উপহারগুলো। এটি হতে পারে মায়ের ঘরে ভেতরেই প্রতিদিন পড়ে থাকা কানের দুল বা বাইরে গেলে টুকটাক সাজসজ্জায় মা যেগুলো ব্যবহার করেন সেই অলঙ্কারগুলো। এর যেকোনটিই হিরা দিয়ে বাঁধিয়ে উপহার দেয়া যেতে পারে মাকে। এটি হতে পারে একজন সন্তানের পক্ষ থেকে তার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারীটিকে আরও বেশি সুন্দর করে তোলার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার।
মায়ের জন্য শাড়ি
বাঙালী নারীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে এই বিশেষ পোশাক শাড়ি। ঘর থেকে শুরু করে বাঙালী সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত যে কোন অনুষ্ঠানে নারীর সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অবিসংবাদিত প্রতীক এই শাড়ি। এই মা দিবসে এই সৌন্দর্য সূচকটি দিয়ে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে মাকে। মাকে সঙ্গে করে তার প্রিয় রঙের সন্নিবেশে তারই পছন্দ করা প্রিয় শাড়িটি কেনা যেতে পারে। এছাড়া মাকে না জানিয়ে আগে থেকে কিনে রেখে মা দিবসে তাকে চমকে দেয়া যেতে পারে। ভালবাসার প্রকাশ করতে নয়; বরঞ্চ আপন আনন্দের আতিশয্যে সন্তানের দেয়া এই উপহারটি মা পরম মমতায় অঙ্গে ধারণ করে ঘরের যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবেন।
Leave a Reply